হাঁস মুরগি ও কোয়েল পাখির ভ্যাকসিন দেওয়ার তালিকা
বাণিজ্যিক ব্রয়লার মুরগির ভ্যাকসিশেন প্রোগ্রাম (Vaccination programme for commercial Broiler):
ক্রমিক নং | বয়স(দিন/সপ্তাহ) | ভ্যাকসিনের নাম | প্রয়োগ পদ্ধতি |
১ | ০১ দিন | ইনফেকশাস ব্রংকাইটিস ভ্যাক. | চোখে ড্রপ/ — |
২ | ৪/৫ দিন | রাণীক্ষেত রোগের ভ্যাক. | চোখে ড্রপ/ — |
৩ | ৭-১০ দিন | গামবোরো রোগের ভ্যাক. | চোখে ড্রপ/ — |
৪ | ১৪-১৮ দিন | গামবোরো রোগের ভ্যাক. | চোখে ড্রপ/খাবারের পানিতে |
৫ | ২০-২১ দিন | রাণীক্ষেত রোগের ভ্যাক. | চোখে ড্রপ/খাবারের পানিতে |
বিঃদ্রঃ এই ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রাম একটি নমুনা মাত্র। মুরগির শারীরিক অবস্থা ,খামারের ফ্লোকের পারিপার্শ্বীক অবস্থা,ইত্যাদি বিবেচনা স্বাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট এলাকার ভেটেরিনারিয়ান /পোলট্রি প্রাকটিশনার এ ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রামে পরিবর্তন আনতে পারবেন। তবে ভ্যাকসিন প্রয়োগের পূর্বে পোলট্রি প্রাকটিশনারকে অবশ্যই ভ্যাকসিন ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানীর অনুমোদিত নির্দেশনা সমূহ ভালোভাবে দেখে নিতে হবে।
উল্লেখ্য যে, খামারে কিংবা সংশ্লিষ্ট এলাকায় ইনফেকশাস ব্রংকাইটিস এর প্রাদূর্ভাব থাকলে মুরগির বাচ্চাকে একদিন বয়সে ইনফেকশাস ব্রংকাইটিস ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা যেতে পারে। গামবোরো রোগের ভ্যাকসিন প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রথমটি ইন্টারমেডিয়েট ভ্যাকসিন ও দ্বিতীয়টি ইন্টারমেডিয়েট প্লাস ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা যেতে পারে।
সোনালী জাতের মুরগির ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রাম (Vaccination programme for Sonali Breed) :
ক্রমিক নং | বয়স ( দিন/সপ্তাহ ) | ভ্যাকসিনের নাম | প্রয়োগ পদ্ধতি |
১ | ৪/৫ দিন | রাণীক্ষেত+ব্রংকাইটিস ভ্যাক. | চোখে ড্রপ/ — |
২ | ৭-১০ দিন | গামবোরো ভ্যাক. ইন্টারমেডিয়েট | চোখে ড্রপ/ — |
৩ | ১৪-১৮ দিন | গামবোরো ভ্যাক.ইন্টার.প্লাস | চোখে ড্রপ/খাবার পানিতে |
৪ | ১৯-২১ দিন | রাণীক্ষেত+ব্রংকাইটিস ভ্যঅক. | চোখে ড্রপ/খাবার পানিতে |
৫ | ২৩-২৫ দিন | গামবোরো ভ্যাক.ইন্টার. প্লাস | চোখে ড্রপ/খাবার পানিতে |
৬ | ৪৫-৫০ দিন | রাণীক্ষেত রোগের ভ্যাক. | খাবার পানিতে |
বিঃদ্রঃ সোনালী জাতের মুরগির ক্ষেত্রে বদ অভ্যাস জনিত সমস্যা রোধে ১০-১২ দিন বয়সে বাচ্চা মুরগির ঠেঁটে স্যাকা দেওয়া উচিৎ। প্রয়োজনে এক দিন বয়সের বাচ্চাকে মারেক’স রোগের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে। ব্রিডার্স মালিক যদি একদিন বয়সের বাচ্চাকে মারেক’স রোগের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে থাকেন সেক্ষেত্রে দরকার হবে না। ৪০-৪২ দিন বয়সে সোনালী জাতের মুরগিকে অবশ্যই কৃমিনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
হাঁসের ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রাম ( Vaccination programme for Duck ) :
ক্রমিক নং | বয়স ( দিন/সপ্তাহ ) | ভ্যাকসিনের নাম | প্রয়োগ পদ্ধতি |
১ | ১৭-২০ দিনে | ডাক প্লেগ রোগের ভ্যাক. | ১মিলি/ডাক (বুকের মাংসে ইনজেকশন) |
২ | ৩০-৩৫ দিনে | ডাক প্লেগ বুস্টার ডোজ | একই নিয়মে |
৩ | ৬০-৬৫ দিনে | ডাক কলেরা ভ্যাক. | ০.৫ মিলি/ডাক ( চামড়ার নিচে ইনজেকশন) |
৪ | ৮০-৮৫ দিনে | ডাক কলেরা বুস্টার ডোজ | একই নিয়মে |
বিঃদ্রঃ এ ভ্যাকসিন প্রোগ্রাম একটি নমুনা মাত্র। হাঁসের শারীরিক অবস্থা ও রোগের প্রাদুর্ভাবের উপর ভিত্তি করে এ ভ্যাকসিন তালিকায় পরিবর্তন আনা যাবে। উল্লেখ্য যে, ডাক প্লেগ ভ্যাকসিন বুস্টার ডোজ প্রয়োগ করার পর পূণরায় এক বৎসর অন্তর অন্তর এবং ডাক কলেরা ভ্যাকসিন বুস্টার ডোজ প্রয়োগের পর পূণরায় ৬ মাস অন্তর অন্তর প্রয়োগ করতে হবে। তবে প্রয়োজনে ভ্যাকসিন ম্যানুফ্যাকচারিনং প্রতিস্ঠানের নিয়মাবলী অনুসরণ করা যেতে পারে।
জেনে রাখা দরকার য়ে, হাঁসের বাচ্চা ৩৫ দিনের পূর্বে কোনভাবেই পানিতে ছাড়া যাবে না। কারণ হাঁসের বাচ্চা সাঁতরাতে না পারলে পানিতে ডুবে মারা যেতে পারে।
কোয়েল পাখির ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রাম (Vaccination programme for Quail birds ) :
ক্রমিক নং | বয়স ( দিন/সপ্তাহ) | ভ্যাকসিনের নাম | প্রয়োগ পদ্ধতি |
১ | ৫-৮ দিনে | রাণীক্ষেত রোগের ভ্যাক. | চোখে ড্রপ/ — |
২ | ২৪-২৮ দিনে | রাণীক্ষেত রোগের ভ্যাক. | চোখে ড্রপ/ — |
বিঃদ্রঃ কোয়েল পাখিকে সাধারণত ভ্যাকসিন দেওয়ার দরকার হয় না। তবে এলাকায় রাণীক্ষেত রোগের প্রাদুর্ভাব থাকলে প্রতি ২ মাস পর পর ল্যাসোটা ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে । কোয়েল পাখিকে কোন রকম কৃমিনাশক খাওয়াতে হয় না। উল্লেখ্য যে, কোয়েল পাখির বাচ্চাকে প্রথম ২ সপ্তাহ নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। বাচ্চা ঠিকমতো খাদ্য ও পানি গ্রহণ করছে কিনা,ব্রুডিং তাপমাত্রা সঠিক আছে কিনা ,বাচ্চার ঘণত্ব বেশি কিনা ,বাচ্চার রোগ আছে কিনা,খামারে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা আছে কিনা,এমোনিয়া গ্যাসের প্রাদুর্ভাব আছে কিনা ইত্যাদি বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে।
পরিশেষে জেনে রাখা দরকার যে, ব্রুডিং চলাকালীন সময়ে ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর ব্রয়লার,লেয়ার ও সোনালী মুরগির বাচ্চার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে আরো ৫ ডিগ্রী ফারেনহাইট তাপমাত্রা বেশি প্রয়োজন। কারণ ভ্যাকসিন প্রয়োগের পরে বাচ্চা ধকল/পীড়নে আক্রান্ত হয় এবং অপেক্ষাকৃত দূর্বল বাচ্চা সমূহের গায়ে কাঁপুনি সহ জ্বরে আক্রান্ত হয়। তাই এ সময়ে বাচ্চার বাড়তি তাপের দরকার হয়। এ বাড়তি তাপমাত্রা ঠিক ততোক্ষণ থাকবে যতোক্ষণ ব্রুডারের নীচে বাচ্চা থাকবে। ব্রুডারের নীচে বাচ্চা না থাকলে পূর্বের তাপমাত্রায় ফিরে যেতে হবে।