বাংলাদেশে টার্কি মুরগি ক্রমবিকাশ ও গুরুত্ব

টার্কি মুরগি (Turkey Fowl):
বাংলাদেশের ক্রমবিকাশমান পোলট্রি সেক্টরে নতুন সংযোজন হয়েছে টার্কি মুরগি (Turkey Fowl)।টার্কি বাংলাদেশে কোন এক সময়ে কোন কোন বাড়িতে শোভাবর্ধনকারী (Ornamental Birds) মুরগি হিসেবে পরিচিত ছিল। টার্কি অন্যান্য পাখি থেকে বড় জাতের পাখি। বর্তমানে বাংলাদেশের অনেক এলাকায় ছোট ছোট টার্কি খামার গড়ে উঠেছে। ঢাকা,গাজীপুর,নারায়ণগঞ্জ,নরসিংদী,ময়মনসিংহ,খুলনা সহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় ছোট ও মাঝারি আকারের টার্কি খামার গড়ে উঠেছে। টার্কি মুরগির মাংসের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় টার্কি মুরগি খামারের সংখ্যাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্রামে – গঞ্জে অনেক বেকার যুবক ও সৌখীন মানুষ টার্কি মুরগি পালনের দিকে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছেন। অবশ্য এই সংখ্যা প্রতিনিয়তই বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্রামে-গঞ্জে অনেকেই প্রথম দিকে দেশি কুচে মুরগির মাধ্যমে টার্কি মুরগির ডিম ফোটালেও (Hatching) বর্তমানে তা ছোট আকারের হ্যাচিং মেশিনের সাহায্যে টার্কি মুরগির ডিম ফোটানো (Hatching) শুরু করেছেন। টার্কি মুরগি মাংসের চাহিদা উত্তর উত্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় টার্কি মুরগি পালনকারীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাংলাদেশে বর্তমান সময়ে টার্কি মুরগি পালন ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প পর্যায়ে থাকলেও অদূর ও নিকট ভবিষ্যতে বৃহত্তর পর্যায়ে স্থান দখল করবে। যা আগামীতে টার্কি শিল্প নামে পরিচিতি লাভ করবে। দেশে খুব শীঘ্রই বৃহত্তর পরিসরে আধুনিক মানের টার্কি মুরগির খামার স্থাপিত হবে। বর্তমানে দেশের কোন কোন স্থানে অনেকেই বড় আকারের টার্কি মুরগির খামার গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিনিয়োগ করতে শুরু করেছেন।
বাংলাদেশের আবহাওয়া টার্কি মুরগি পালনের জন্য বেশ উপযোগী। বিগত ২-৩ বছরে টার্কি মুরগি পালন বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে এবং বেশ সাড়া জাগিয়েছে।
টার্কি মুরগির আদি নিবাস উত্তর আমেরিকা ও মেক্সিকো। সেখানে টার্কি ফাউল বা ইন্ডিয়ান টার্কি নামে পরিচিত। পরবর্তীতে যা সংক্ষেপে টার্কি নামেই পরিচিতি পায়।টার্কি ফাউল প্রথম দিকে উত্তর আমেরিকা থেকে বণিকদের মাধ্যমে কানাডা,ইংল্যান্ড,মধ্যপ্রাচ্য সহ পৃথিবীর অনেক দেশেই বিস্তার লাভ করে। টার্কি মুরগির মাংস অন্যান্য প্রাণীর মাংসের চেয়ে অনেক বেশি জনপ্রিয়।
প্রতি ১০০ গ্রাম টার্কি মুরগির মাংসে পুষ্টিগুণ নিম্নরূপ —-
ক্যালোরির পরিমাণ ——১৮৯ ক্যালোরি
মোট ফ্যাটের পরিমাণ —-৭ গ্রাম
কোলেস্টেরলের পরিমাণ–১০৯ মিলিগ্রাম
কার্বো হাইড্রেটের পরিমাণ–০.১গ্রাম
প্রোটিনের পরিমাণ ——— ২৯ গ্রাম
আয়রনের পরিমাণ ———৬ %
ভিটামিন ডি এর পরিমাণ –৩%
ক্যালসিয়াম এর পরিমাণ –১ %
ভিটামিন বি১২ এর পরিমাণ –১৬ %
ভিটামিন বি ৬ এর পরিমাণ –৩০ %
ম্যাগনেসিয়াম এর পরিমাণ –৭ %
ভিটামিন ‘এ ‘ এর পরিমাণ — ০ %
টার্কি মুরগির ডিম সাধারণত টেবিল এগ(egg) হিসেবে ব্যবহার করা হয় না।কারণ ডিমের উৎপাদন খরচ অনেক বেশি। টার্কি মুরগি বছরে প্রায় ৮০ – ১০০ টি ডিম দিতে সক্ষম। অপরদিকে বাণিজ্যিক মুরগি বছরে প্রায় ৩০০ টি ডিম দিতে সক্ষম।